মনন...5thMarch 2020

জীবন্মৃতের বিবৃতি
*****************

ভাইরাসের ভয় জানাল জীবন্মৃত শহরকে,
নাগরিকেরা আজও বেঁচে সভয়ে।
আর সামান্য বাঁচার ইচ্ছা,
আবার মুকুল ঝরে আমের গুটি দেখতে পাওয়া,
মনে পড়া, ঈশান কোনে বর্ষার মেঘ।
এভাবেই ভয় থেকে জীবনের জন্ম,
বাঁচতে চাওয়ার ইচ্ছারা সাড়া পায় শরীরের,
হয়ত বা, তারাই নির্মাণ করে শরীর।

পশ্চিমে এগিয়ে যাওয়ার পথে 
মেঘলা সকালে, থমকে দম নিল সকালের সূর্য,
বেলুনওয়ালা শিশু, হলদে ট্যাক্সি ও 
ট্রামের শব্দ।
তখন ভেজা চুলে তুমি শুয়ে ছিলে আমার পিঠে,
তোমার আঙুলের গ্রাসে আমার চুল,
তোমার মুখের আদল ফুটে উঠেছে আমার নোনা দেওয়ালে,
নোনার কবলে আমারও স্বপ্নগুলো।
তবুও, অনন্ত গল্পের নেশায় মেতেছি আমরা।
যে সংলাপের দৈর্ঘ্য,
কবেই অতিক্রম করেছে রাজপথ।

অথচ, কয়েক শতকের চলাচলে ক্লান্ত তিলোত্তমা,
কখনও এক কন্যা শিশুও ছিল।
বানিয়েছিল মাটির পুতুলের মত বাড়িঘর,
সাজিয়েছিল অসংখ্য বাজারের পশরা,
পাহাড়ি পথের স্মৃতি উস্কে দিত তার বুকে 
ঝাউ গাছের সারি।
হাত পা ছুঁড়ে বুড়ো হওয়ার ব্যস্ততার মাঝে
শহুরে ঝাউয়ের দল
সারা গায়ে ধুলো মেখে,
ছিল আজ স্নানের প্রতীক্ষায়।
সকালে ঝাউপাতাও তার পিঠে বৃষ্টির জল নিয়ে
ফুটিয়েছিল এক টুকরো হাসি।
সে হাসিই আজ হঠাৎ অনেক বছর পরে,
সব উৎকণ্ঠার নিয়েও চোখে ধরে রেখেছে, মুখোশের লাইনে ব্যস্ত নাগরিক।

তিনশো বছরের ক্লান্তি নিয়েও খুশি এ শহর,
আরো কিছুদিন জীবন্মৃতই থাকতে চায়।

দেবাঞ্জন বাগচী।

(পুনশ্চ: এই কবিতার নামে আমার মামার একটি কবিতার বই ছিল। অনেক চেষ্টা করেও নামটা এড়াতে পারলাম না। নরানাং মাতুলক্রম:। মামা Sorry Apurba Das)

Comments

Popular posts from this blog

যেতে যেতে ৫ :: 22nd July 2018

যেতে যেতে ৪ : 7th July 2018

মনন..10th Feb 2019